ঈদের নামাজ পড়বেন যেভাবে

 ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম 


ঈদের নামাজের নিয়ম,ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম, ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম, ঈদের নামাজের নিয়্যত, অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত -----






ঈদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব । আমাদের মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর দু'টি ঈদ উদযাপন করে। যার একটি ঈদ-উল-ফিতর ও অপরটি ঈদ-উল-আযহা ৷ সুস্থ মুসলিমদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব । বছরে দুই বার ঈদের নামাজ পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। তাই ঈদের নামাজের নিয়ম  / ঈদের নামাজের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-

ঈদের নামাজ ছাদবিহীন খোলা জায়গায় আদায় করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করতেন। যদি খোলা স্থানের ব্যবস্থা না থাকে তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।

> ঈদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি : 

ঈদের নামাজ খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা বাসা-বাড়ি যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যেসব শর্ত প্রয়োজন, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও একই শর্ত প্রযোজ্য।

সুতরাং জামাআত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না। বাসা-বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হলেও অবশ্যই জামাআতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।

>> ঈদের নামাজ :  ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমআর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।

>> ঈদের নামাজের পার্থক্য  : তবে ঈদের নামাজের জন্য পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ৬ তাকবির দিতে হবে।




প্রথম রাকআতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।

দ্বিতীয় রাকআতে সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া ৷

>> ঈদের নামাজের নিয়্যত :  ঈদের দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি... আল্লাহু আকবার।

প্রথম রাকআত :

১. তাকবিরে তাহরিমাঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা 'আল্লাহু আকবার' বলে হাত বাঁধা।

২. ছানা পড়া'সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।

৩. অতিরক্তি ৩ তাকবির দেয়া।এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া।

৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া৫. সুরা ফাতেহা পড়া৬. সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।

দ্বিতীয় রাকআত : 

১. বিসমিল্লাহ পড়া 

২. সুরা ফাতেহা পড়া 

৩. সুরা মিলানো 

৪. সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া। প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।

৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।৬. সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

তারপর খুতবাঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। অবশ্য অনেকেই খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন।

অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাআতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে ৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

উল্লেখ্য, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক দেশের মসজিদ কিংবা বাইরে বিশাল জামাআতে ঈদের নামাজ আদায়ে রয়েছে বিধি-নিষেধ। তাই মসজিদ ছাড়াও বাসা-বাড়িতেও ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে। তবে শর্ত হলো তা জামাআতে আদায় করা এবং খুতবা দেয়া।

আর ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ইমাম ছাড়া ন্যূনতম তিনজন মুসল্লি হতে হবে। পরিবার নিয়ে জামাআতে ঈদের নামাজসহ যে কোনো ওয়াক্তের নামাজে এ চিত্র অনুযায়ী দাঁড়ানো।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ঈদের নামাজ আদায়ে যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রেখে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Post a Comment

0 Comments