অবাধ্যতার ইতিহাস pdf download | শামসুল আরেফিন শক্তি



১৫ শতকের পর ইউরোপে শুরু হয় ধর্মহীনতার ইতিহাস।ধর্মকে ঝেড়ে ফেলে ইউরোপ বিশ্বজুড়ে সমাধানের মোড়কে সমস্যা আর ঔষধের মোড়কে আমাদেরকে বিষ সাপ্লাই করছে। বস্তুবাদের চরমপন্থায় অবস্থান নিয়েছে ইউরোপ। এই অবস্থানেরই ফলাফল নৈতিকতায় লিবারেজম,নারী দর্শনে নারীবাদ,সফলতার সংঙ্গায় ভোগবাদ,অর্থক্ষেত্রে পুঁজিবাদ, রাষ্ট্রনীতিতে গণতন্ত্র,সমরনীতিতে রেজিমেন্ট সিস্টেম, ব্যক্তিনীতিতে ক্যারিয়ারিজম,জ্ঞানতত্বে প্রকৃতিবাদ,আধ্যাত্মিকতায় দেশপ্রেম,প্রেরণায় জাতীয়তাবাদ। 

এই এতোকিছুর যাতা কলে পড়ে আমরা মুসলিমরা কোথায় অবস্থান করছি,আমাদের ফিলোসোফি,আমাদের সাইকোলজি আজ কার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে তা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি?আমরা এখন যেভাবে চিন্তা করি শত শত বছর আগেও কি একই ভাবে চিন্তা করতাম?নাকি এই চিন্তা কোন বিশেষ কায়দায়, কোন বিশেষ কারণে আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে? 

এই যে আমাদের শত শত বছর আগের চিন্তা আর শত শত বছর পরের চিন্তা ; এই যে এই আগের ও পরের চিন্তার মাঝে যে পার্থক্য,এই পার্থক্যের মাঝে আমাদের চিন্তার অবাধ্যতার যে নির্মম সত্য কিছু কাহিনী আছে সেই সব কাহিনীরই সমষ্টি হচ্ছে অবাধ্যতার ইতিহাস বইটি

বইটির আলোচনার মূল বিষয়বস্তু এবং বই থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা সমুহ

প্রথমেই বলি,বইটি একটি মাস্টারপিস।সুতরাং কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে শিক্ষা সমূহ তুলে ধরা অসম্ভবই নয়,বরং অযৌক্তিক। তবুও কিছু পয়েন্ট নিচে তুলে ধরা হলো

(১)ইউরোপের ধর্মীয় ইতিহাস তথা:খ্রীষ্টধর্মের ইতিহাস এবং রেনেসাঁ

(২)এনলাইটেনমেন্ট

(৩)মুসলিম বিশ্বের জ্ঞানের জাগরণ, সভ্যতা নির্মান,সমাজব্যবস্থা ও ইসলামি খিলাফত ইত্যাদি

(৪) ভারতবর্ষের আগের অবস্থা

(৪)বিজ্ঞানবাদ,আল্লাহ কে, আল্লাহর আযাব,গজব এবং আমাদের স্পর্ধা

(৫)ঈমান-কুফর সীমান্ত

(৬)তিনটি সুরা যথা-সুরা ফিল,সুরা কুরাইশ এবং সুরা লাহাবের অবলম্বনে কুরআনের ভাবনা

(৭)অসি

বইটি কারা পড়বেন এবং কেন পড়বে

নিজের ইতিহাস জানা প্রতিটি মানুষের অধিকার। নিজের অধিকার নিজে রক্ষা করার জন্য হলেও বইটি প্রতিটি মানুষের পড়া উচিত।

আমি কে?এখানে আমি কি করছি?কিভাবে এলাম এখানে? আমার পরিচয় কি? কি আমার ইতিহাস?

ইতিহাসের শুরু থেকেই কি আমি অবাধ্যতার পথে চলছি?আমার ইতিহাস কি অবাধ্যতার?বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা যে অবস্থায় আছে আজ থেকে ৬-৭ শ বছর আগে ও এমন ই ছিল? উপরের নীতি গুলোর ফলে ই কী তাদের আজ এ অবস্থা? কেমন ই বা ছিল ৩০০ বছর আগের ভারত? কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জিডিপি এর দেশ, কম দূর্নীতির দেশ থেকে আজ এ অবস্থানে ভারত?

বইটি একে একে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গিয়েছে।

এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই বইটি হতে পারে আপনার জন্য একটি ব্লেসিং

পাঠক প্রতিক্রিয়া

কিছু বই আছে যেই বই গুলো পড়ার সময় অনেক বেশি যিকির করা হয়।এই বইটিও তার বিপরীত নয়।বইয়ের বেশির ভাগ তথ্যই এমন যে নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বারবার আসতাগফিরুল্লাহ আর সুবহানাল্লাহ শব্দ দুটো সবচেয়ে বেশি বের হয়েছে।এক কথায় আমার কাছে বইটিকে একটি মাস্টারপিস মনে হয়েছে এবং মনে হয়েছে প্রত্যেকটি মানুষেরই বইটি পড়া উচিত।

বই সম্পর্কিত মতামত 

বই সম্পর্কে মতামত দেওয়ার আগে আমার মনে হয় লেখক সম্পর্কে মতামত দেওয়াটা একটু জরুরী।আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখকের নাম ডা.শামসুল আরেফীন।আমার কাছে তার লেখা গুলো ভীষণ অসাধারণ লাগে।এর প্রধান কারণ হচ্ছে তিনি তার প্রতিটি বইয়েই ইসলামের সাথে বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যানের একটি অভূতপূর্ব সমন্বয় সাধন করেন। অবধ্যতার ইতিহাস বইটিও এর ব্যাতীক্রম নয়।বইয়ের প্রতিটি পেইজে পেইজে রয়েছে শরীর শিউরে দেওয়ার মতো পরিসংখ্যান আর রেফারেন্স এবং বেশ কিছু পেইজে প্রয়োজনীয় চিত্রও পরিলক্ষিত হয়

এছাড়া সমকালীন প্রকাশনীর অন্য সব বইয়ের মতো এই বইয়ের পেইজ কোয়ালিটি, বাইন্ডিং সবকিছুই মাশাল্লাহ অনেক ভালো লেগেছে ।খুব একটা বানান ভুল বা প্রিন্টিং মিস্টেক চোখে পড়ে নি

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সমকালীন প্রকাশনীকে যারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে আমাদের পাঠক সমাজকে এতো সুন্দর একটি বই উপহার দিয়েছেন।

শেষ কথা

বইটা পড়ে সবচেয়ে বেশি আফসোস হয়েছে আমাদের ভারত উপমহাদেশের নিয়ে, আগে বিশ্বের শীর্ষ ইকোনমিকাল দেশ ছিল, কিভাবে কোটি কোটি পাউন্ড প্রচার হয়ে ব্যবসা নির্ভর দেশ থেকে কৃষি নির্ভর দেশ হয়ে গেলো তা নিয়ে।

বইটি ডাউনলোড করুন

লিংক ১  | লিংক ২ ]

একটি ড্রাইভ লিংক আরেকটি ফাঁকা


Post a Comment

0 Comments