জীবিকার খোঁজে pdf download | ইমাম মুহাম্মাদ (রহিমাহুল্লাহ)

 




দুনিয়া বিরাগী ও প্রথিতযথা ইমাম শাইখ সামসুল আইম্মা ফখরুল ইসলাম আবু বকর সারাখ্সি ছাত্রদের লেখার নির্দেশ দিয়ে বলেনঃ 


"তোমরা আমার কাছে চেয়েছিলে, আমি যেন মুহাম্মদ ইবনুস হাসান এর প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, হাকিম শহীদের আল কাফী/আল মুখতাসার গ্রন্থটির ব্যাখ্যা তোমাদের দিয়ে লিখিয়ে নেবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি৷ আমি তোমাদের অনুরোধে সাডা দিয়েছি৷ এখন আমি চাই– এর সঙ্গে "কিতাবুল কাসব্" গ্রন্থের ব্যাখ্যা জুডে দেই, যে গ্রন্থটি মুহাম্মদ ইবনুল হাসান থেকে মুহাম্মদ ইবনু সামাআ বর্ণনা করেছেন৷ লিপিবদ্ধ করার কাজটি অবশ্য তোমাদেরই করতে হবে৷ 


এ গ্রন্থটি ইমাম মুহাম্মদ এর সামগ্রিক রচনারই অংশ; তবে এটি খুব বেশি প্রসিদ্ধ লাভ করেনি৷ এর কারণ হলো, তার কাছ থেকে আবূ হাবস বা সুলাইমানের কেউই এই গ্রন্থের বর্ণনা শুনেনি৷ এরজন্য হাকিম শহীদও তার আল-মুখতাসার গ্রন্থে এর উল্লেখ করেননি৷ 


গ্রন্থটির জ্ঞানের এমন কিছু বিষয় আছে, যে ব্যাপারে ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার কোন সুযোগ নেই; না জেনে বসে থাকারও কোন উপায় নেই৷ উপার্জনকারীদের সাথে উপার্জন কর্মে যোগ দিয়ে, নিজের হাতের উপার্জন থেকে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য গ্রন্থটিতে নিস্ব লোকদের উৎসাহিত করা হয়েছে৷ এই বইয়ে যদি জ্ঞানের এতশত উপকরণ না থেকে শুধু এটুকু থাকতো, তাতেও এ জ্ঞান ছডিয়ে দেয়া প্রত্যেকের জন্য বাধ্যতামূলক হতো৷ 


"জীবিকার খোঁজে" বইয়ের রিভিউতে রেজউয়ান লিখেছেন –


দুনিয়াবী জীবন ও সম্পদ অতি সামান্য এবং আল্লাহর ভয়ে ভীত মানুষের জন্য আখিরাতই উত্তম।’ (নিসা ৪:৭৭)

স্রষ্টার কাছে সমর্পিত আত্মার জীবনের প্রতিটি স্তর স্বর্গীয় ছাঁচের আদলে গড়া। হাক্কুল্লাহ এবং মু’আমালাত পেরিয়ে জীবনোপকরণ অর্থাৎ খাবার-পোশাক-গৃহ প্রভৃতির সঙ্গে সম্পর্কেও অনুগত বান্দার মধ্যে সে ছাপ সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে।

‘দুনিয়া আর তার উপাদানের প্রতি আসক্তি’- এ সম্পর্ককে পুঁজি করেই পৃথিবীতে আল্লাহর অবাধ্যতা আর মানুষে মানুষে এতসব কোন্দলেে সূত্রপাত। সুতরাং, কেবলমাত্র স্রষ্টার ছাঁচই পারে এসকলকিছুর সমাধান হতে।

বইয়ের প্রকৃতি

ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর অন্যতম প্রধান ছাত্র, ইমাম মালিক রহ.-এর ছাত্র এবং ফিকহশাস্ত্রের অন্যতম ইমাম, মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শাইবানি রহ.-এর লিখিত প্রায় ১২৫০ বছর পূর্বেকার ‘আল কাস্‌ব’ গ্রন্থটির একমাত্র পূর্ণ বাংলা অনুবাদ ‘জীবিকার খোঁজে’ বইটি। দুনিয়া এবং তার জীবনোপকরণের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে স্রষ্টা নির্দেশিত পথে পরিচালনা করবার অনুপুঙ্খ এক বিশ্লেষণের স্বাক্ষর এই গ্রন্থটি।

এতে উপার্জনের বাধ্যবাধকতা, এ ব্যাপারে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভ্রান্তির খণ্ডন, তাওয়াক্কুলের স্বরূপ, দারিদ্র্য ও প্রাচুর্যতার তুলনামূলক বিশ্লেষণ, হালাল এবং হারাম উপার্জন, জীবনোপকরণ বা অর্থসম্পদ ব্যয়নীতি, দাতা ও গ্রহীতার তুলনামূলক বিশ্লেষণ, জ্ঞানার্জনের বাধ্যবাধকতা, পোশাকে সুসজ্জিত হওয়ার বিধান, মধ্যপন্থা অবলম্বন প্রভৃতি – সম্পর্কে নবীদের সর্দার মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, অন্যান্য নবী-রাসূল ও সাহাবীদের নির্দেশ, মতামত এবং কর্মপন্থা সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাঠকের অনুভূতি

‘তারা যখন ব্যয় করে, তখন অপচয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না; বরং উভয় প্রান্তিকতার মাঝামাঝি তাদের ব্যয় ভারসাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে।’ (ফুরকান ২৫:৬৭)

রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আমাকে উদার মধ্যপন্থা দিয়ে পাঠানো হয়েছে।’ (খতিব বাগদাদী, তারিখ:৭/২০১)

ব্যক্তিগতভাবে দুনিয়ার জীবনের ঠুনকো আর তামাশা-সদৃশ প্রকৃতিকে মোকাবেলা করে মধ্যপন্থা অবলম্বনের তাত্ত্বিক নীতি ও নির্যাস আমি এই বই থেকেই পেয়েছি৷ দুনিয়ার মোহের পিছুপিছু ছুটে যখন সব অর্থহীন ঠেকছিলো, তখন বিশেষ করে ‘জীবিকার খোঁজে’ বইটির গোছালো তত্ত্ব-নীতি আর ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রহ.-এর ‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’ বইটির হৃদয়-নিঙড়ানো লেখনী-ই আমাকে পথ চিনিয়েছে। আর এ বইয়ের সমালোচনা তো তুচ্ছ-আমি কি, কারো পক্ষেই সম্ভব নয়! অনুবাদের মাধুর্য, বানানের প্রতি খেয়াল, টীকা সংযোজন এবং বাইন্ডিং-ও বায়ানের অন্যান্য বইয়ের মতো বরাবরই উঁচু মানসম্পন্ন।

নফসের শুদ্ধিকরণ, দুনিয়ার জীবন উপলব্ধি এবং জীবনকে স্বর্গীয় ছাঁচের আদলে গড়বার জন্য আপনাকে মোটাদাগে স্পষ্ট মূলনীতি সরবরাহ করবে ‘জীবিকার খোঁজে’ নামক অমূল্য বইটি।



বইটি ডাউনলোড করতে




Post a Comment

0 Comments