শোনো হে যুবক pdf download | ড. রাগিব সারজানি

শোনো হে যুবক pdf download | ড. রাগিব সারজানি

 


যুবক, শব্দটা শুনলেই তরতাজা কিছু ১৮-২৫ বছরের কিছু মানুষদের ছবি সামনে ভাসে। যারা পৃথিবীতে নতুন কিছু দেয়ার, নতুন কিছু ঘটানোর ক্ষমতা রাখে। যারা উচ্ছ্বাসে ভরপুর, স্বপ্ন পূরণে যারা পিছপা হয় না, বাধা-বিপত্তিকে যারা বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলে সব সময়, এমন মানুষেরাই তো যুবক। কিন্তু বর্তমানের অধিকাংশ যুবককে দেখলে মনে হয়, তারা তারুণ্য কি বোঝেই না, ঝিমিয়ে-নেতিয়ে পরা কোন গাছ। তাদের তারুণ্য শুধু বিনোদনে ও নিজের ভবিষ্যত নিয়ে। নেই সমাজকে দেয়ার মতো তাদের কাছে কোন ভাল পরিবর্তন এবং নেই সমাজকে বদলানোর মতো স্পৃহা। নিজেকে নিয়ে তাদের ব্যস্ততা, বিনোদনের ভারে চাপা পরা ভবিষ্যত নতুন প্রজন্ম সমন্ধে বেখবর একদল উদ্ধাস্তু। লেখক ড. রাগেব সারজানী সেই তরুন সমাজকে উজ্জিবীত করার জন্যই উক্ত গ্রন্থখানা তাদের সামনে পেশ করেছেন। ইতিমধ্যে লেখকের “তাতারিদের ইতিহাস” গ্রন্থটি পাঠক সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই উক্ত গ্রন্থখানা যে ভাল হবে, এটাতে কোন সন্দেহ আর থাকে না। অল্প কথায় সুন্দর উপস্থাপনা পাঠকের হৃদয় বিগলিত হতে বাধ্য।

গ্রন্থপর্যালোচনা:

শোনো হে যুবক” গ্রন্থের শুরুতেই তিনি কোন এক সেমিনারে প্রসিদ্ধ আযহার ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের মধ্য থেকে তাদের সমস্যাবলি জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে দেখা যায় সবাই তাদের ব্যক্তিগত সমস্যাগুলোকেই উল্লেখ করেছেন। সামাজিক, বৈশ্বয়িক সমস্যা নিয়ে কেউ ভাবেই না। তিনি তাদের সমস্যাগুলোতে না যেয়ে এ সমস্যার উৎপত্তি স্থানগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।

লেখক প্রথমেই ইসলামে যুবকদের মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরপর নবুয়তের পর যুবকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কথা আলোচনা করেছেন। ৫(পাঁচ) জন সাহাবী(রা) এর উদাহরণ টেনে এনেছেন, যাঁরা ইসলামের খেদমতে এমন সব কাজ করেছেন, যেসব কাজ অনেক উপস্থিত বড় সাহাবীরাও করেন নি বা তাঁদেরকে সেই কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় নি। অথচ তাঁদের বয়স ১৫-১৭ বছর, এর বেশি না।

এরপর লেখক আমাদের যুবকদের অধঃপতনের মৌলিক চারটা কারণ আলোচনা করেছেন, যথাযোগ্য কুরআন ও হাদীসের দলিলসহ। এরপর দরদমাখা কণ্ঠে ১০(দশ)টি উপদেশ দিয়েছেন, যেসব অতি অবশ্যই জরুরী একজন তরুণকে নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরী করার জন্য। তাঁদের দৃষ্টভঙ্গি কিভাবে পাল্টাতে হবে, কিভাবে নিজের অবস্থানকে সমাজের, মানুষের প্রয়োজনে কাজে লাগাতে হবে, তা উল্লেখ করেছেন।।

এখানে পাঠ্যসূচীর কিছু অংশ দেয়া হলো।

*যুব সমাজের সমস্যাবলি

*ইসলামে যৌবনকালের মর্যাদা ও গুরুত্ব

*তরুন যুবাইর ইবনে আওয়াম রা.

*যুবক সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা.

*ইবনে আফরা. এর বীরত্ব

*কেন এই ব্যবধান?

*কারণ- ১-৪

*ইসলাম প্রতিপালন নীতি বর্জন

*হতাশা

*উপদেশ – ১-১০

*এক্ষুনি গুনাহ ছেড়ে দিন

*দ্বীন ইসলামকে বুঝুন

*শরীর-চর্চা করুন

*সময় কাজে লাগান

একসময় এ যুবকরা নবী(সা) ও তাঁর পরবর্তী অনুসারীদের এর সহচার্যে থেকে আরবের যাযাবর গোষ্ঠী হয়েও পারস্য, রোম, কনস্টান্টিনোপল, স্পেন পদদলিত করেছে। ইসলামের বাণী পৌঁছিয়েছে, ইসলামের পতাকা উড়িয়েছে অসংখ্য শক্তিধর জাতির কেল্লাতে। অথচ আজ তারা নিস্তব্ধ, নিশ্চুপ। তারা সময়, যৌবন নষ্ট করছে বিনোদনকে কেন্দ্র করে, খেলাধূলায়। তারা কি করে আবার সেই সোনালী যুগ ফিরে আনবে?

আল্লাহ্‌ পাক বিশেষ করে এই যৌবনকাল সমন্ধেই আখিরাতে জিজ্ঞেস করবে। জীবনের যে সোনালী অধ্যায় পার হয়ে যাচ্ছে, সেটার কি কোন দাম নেই, মূল্য নেই? এ সমাজ, মানবতা যে তরুণদের দিকে অসহায় হয়ে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে যে, কবে তাঁরা এ সমাজের অধঃপতন থেকে বাঁচিয়ে সুন্দর একটা পৃথিবী উপহার দিবে। যে পৃথিবীতে সবাই সুখে থাকবে, থাকবে ন্যায় বিচার এবং মানুষ আল্লাহ্‌ পাকে পরিপূর্ণ অনুগত্য করবে।

গ্রন্থখানার প্রতিটি কথায় হৃদয়ে ঝংকার তৈরী করার মতো, পথহারা তরুণদের পথ দেখানোর মতো। অনুবাদকের সুন্দর শব্দচয়ন ও ভাষাশৈলী দেখলে বোঝা যায়, কতটা যত্নবান হয়ে তিনি কাজটি করেছেন। আমার মনে হয় বর্তমান তরুণ-তরুণী তো বটেই, আমাদের অভিভাবকদেরও বইটা পড়া উচিত, যাতে তারা যুবকদের এগিয়ে নিতে সাহায্য করে। গ্রন্থটা নিজেকে চেনার, জানার ও আদর্শ মানুষ হওয়ার।

বইটির পিডিএফ লিংক 

লিংক ১ | লিংক ২ | লিংক ৩ ]

একটি ড্রাইভ লিংক বাকি দুটো ফাঁকা

Post a Comment

0 Comments