বাইশের বন্যা pdf download | তাসরিফ খান

 


বই: বাইশের বন্যা  

লেখক: তাসরিফ খান 

প্রচ্ছদ: সাহাদাত হোসেন 

প্রকাশনী: কিংবদন্তী পাবলিকেশন 


লেখক পরিচিতি:

জন্ম ১৯৯৪ সালের জুন মাসে। চার ভাইয়ের মধ্যে লেখক তৃতীয় । বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক আর মা গৃহিণী। নেত্রকোনায় নিজ এলাকার অলিতে-গলিতে ছুটোছুটি আর খেলাধুলাতেই কেটেছে আমার শৈশব- কৈশোরের সময়টা। ছোটোবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব একটা মনোযোগী ছিলেন না লেখক।তার ইচ্ছে ছিলো অভিনয় করবে, নয়তো খেলোয়াড় কিংবা গায়ক হবে । তাই পড়াশোনায় খুব একটা ভালো ফলাফল কখনোই করতে পারতেন না।

কোনোরকম উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় এসে পড়াশোনা শুরু করেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়টাতেই পুরোদমে গান নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে কুঁড়েঘর নামে একটি ব্যান্ড তৈরির মাধ্যমে গান নিয়ে লেখকের পথচলা শুরু হয়। 

এখন পর্যন্ত অনেকগুলো মৌলিক গান করার পাশাপাশি সমাজের দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। লেখকের ইচ্ছে আছে- যতোদিন বাঁচবে, গান গাইবে আর অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের ইচ্ছেগুলো পূরণ করে যাবে।


উৎসর্গ: লেখক বইটি তার বড়ো ভাইকে উৎসর্গ করেছেন। একটা বইয়ের আসলে এমন উৎসর্গই হওয়া সমীচীন। লেখাটা ছিল এমন— 


আমার বড়োভাই কে এম তানভীর সিদ্দীকি সজিব


মফস্বলের লিকলিকে শুকনো গড়নের একটি ছেলের জীবন একসময় দুমড়ে মুচড়ে সমাজ থেকে প্রায় ছিটকে যাবার উপক্রম হয়েছিলো। সেই ছেলেটিকে মানুষের মতো মানুষ বানানোর স্বপ্ন নিয়ে নিঃস্বার্থভাবে পাশে থেকে, এক সমুদ্র ভরসা রেখে যে মানুষটি তাঁর নিজের সবটুকু উজাড় করে দিনের পর দিন ছায়ার মতো আগলে রেখেছেন, তাঁকে শুধু একটি বই নয়, পুরো একটি জীবন উৎসর্গ করে দেয়া যায়।


"শূন্য থেকে সামান্য হবার যে যুদ্ধে আমি লিপ্ত হয়েছি তা শুধু মানুষ হয়ে বাঁচতে নয় বরং মানুষের জন্য মানুষ হয়ে বাঁচতে।"

                        -তাসরিফ খান


একজন তাসরিফ খান:

"বাইশের বন্যা" তাসরিফ খানের লেখা প্রথম বই। তাসরিফ খানকে পুরো দেশের মানুষ চেনে কুড়েঁঘর ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে। তবে সর্বস্তরের মানুষ তাসরিফ খানকে চেনে মূলত ২০২২ সালের সিলেটের ভয়াবহ বন্যাতেই। আগে কয়েকবার তাসরিফ খানের গান শুনেছি তবে এই বন্যা যে তাসরিফ খানকে চিনিয়েছে তা বর্তমান সমাজ কোনোদিনও ভুলবে না। ২০২২ এ সিলেটের বন্যা হলো বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়াবহ কালো অধ্যায়। এই বন্যায় অনেক মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে, অনেক শিশু, অনেক পশুপাখি তাদের জীবন হারিয়েছে।

তাসরিফ খান তাদের মন প্রান দিয়ে সাহায্য করেছেন। তাসরিফ খান শুধু গায়ক নয়, তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা, একজন লেখক, মানুষের বন্ধু। তাসরিফ খান এখন তরুন সমাজের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। 


'বাইশের বন্যা' বইটি এক কথায় অসাধারণ একটা বই। আমি এক এক করে প্রতিটি লাইন পড়েছি আর অনুভব করার চেষ্ঠা করেছি, যেনো নিজের চোখে দেখেছি সব।বইটিতে সাতটি পার্ট আছে।

★পানিতে আগুন, 

★তীর্থের কাক, 

★ডাকাতের রাত, 

★মৃত্যুর ডাক, 

★অপহরণ, 

★ভারী বাতাস আর 

★আমরা চাইলেই সম্ভব 

প্রতিটি পার্ট ই খুবই চমৎকারভাবে লেখা হয়েছে। বইটি পড়তে পড়তে অজান্তেই চোখে পানি চলে আসে। নিরুপায় ও অসহায় বানভাসি মানুষের কষ্ট একটু হলেও অনুভব করতে পেরেছি। 


সিলেটে যখন বন্যা শুরু হয় তখন তাসরিফ খানকে সিঙ্গাপুরে কনসার্টে যেতে হয়। তিনি পরিকল্পনা করেন 

সিঙ্গাপুরের কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তাসরিফ খান। পরবর্তীতে কনসার্ট থেকে এসে সে তার বন্ধু শ্রাবণকে নিয়ে চলে যায় সিলেটে। সেখানে গিয়ে দেখেন বন্যার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে শুরু করেছে। ষোল জুন সকালে তারা বের হন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার উদ্দ্যেশে। সেখানেই এক ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হন তারা। অনেক কষ্টে ডাবল ভাড়ায় একটা নৌকা ঠিক করা হয়। নৌকায় ছিল তাসরিফ খান, শ্রাবণ, রুবেল, মাঝি, মাঝির ছেলে, আফজাল। 

নৌকা চলতে শুরু করলে তারা অবাক হয়ে চারপাশ দেখতে থাকে। কোথাও কোনো বাড়িঘরের অস্তিত্ব নেই। বড় বড় গাছের উপরের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। আর দূরে কিছু ঘরের চাল দেখা যাচ্ছিল। তারা এসব এলাকার মানুষ কী পরিস্থিতিতে আছে তা ভেবে চিন্তিত হয়ে পরে এবং ভয় পেতে থাকে। এরপর তারা আলিনগর গ্রামে যায় এবং সেখানে বন্যায় আটকে থাকা মানুষদের দেখে তাসরিফ খান তার পেইজ থেকে লাইভে যান। তিনি দেশবাসীকে এই মানুষগুলোর পাশে দাড়ানোর জন্য ডাক দেন। এরপর তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। কারণ ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

একটু পর পরই বৃষ্টি শুরু হয়। কিছুক্ষন পর একটা জায়গায় এসে তাদের নৌকা আটকে যায়। পানির মাঝে একটা ভয়ানক পাকের মধ্যে তাদের নৌকা চলে যাচ্ছে আর এদিকে তাদের নৌকার ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায় যায় অবস্থা! সবাই ভয়ে একদম কাঠ হয়ে যায়। পরিস্থিতিটা এমন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে পড়ার সময় গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। এরপর রুবেল ছেলেটা সুকৌশলে নৌকাটা বের করে এনে পাড়ে ভিড়ায়। 


পুরো গল্পটা পড়ার সময় বারবার গায়ে কাটা দিয়ে উঠছিল। বন্যায় মানুষের কি পরিমাণ ভোগান্তি হয় তা এই গল্পটা পড়ে আন্দাজ করা যায়। আর তাসরিফ খান ও তার বন্ধুরা কীভাবে বিপদের তোয়াক্কা না করে এই অসহায় মানুষদেরকে সহযোগীতার জন্য ঝাপিয়ে পরে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বইটা পড়তে গিয়ে পুরোটা সময় সবকিছু যেনো চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। কল্পনায় ডুবে গিয়েছিলাম একদম।


বইটির পিডিএফ লিংক

লিংক ১ | লিংক ২ ]


Post a Comment

1 Comments

  1. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete